বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গোপন গুদামে সেগুলি বাক্সবন্দি করা রাখা ছিল বলে দাবি।ডেনমার্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে মস্তিষ্কগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড’স আনটোল্ড স্টোরিজ়: দ্য ব্রেন কালেক্টরস’ নামে ওই তথ্যচিত্রটি সিএনএন-এ দেখানো হয়েছে ১২-১৩ নভেম্বর। যার বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে।দীর্ঘ দিন ধরেই মস্তিষ্ক সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষো চলছিল। তবে তা নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। তথ্যচিত্রে গোটা বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।সংবাদমাধ্যমের দাবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ৩৭ বছর ধরে গোপনে এ হেন সংগ্রহে লিপ্ত ছিলেন ড্যানিশ চিকিৎসকেরা। মূলত স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া, মানসিক অবসাদে ভোগা রোগীদের হাসপাতালে মৃত্যুর পর সেখান থেকে তাঁদের মস্তিষ্ক সরানো হত বলে দাবি।কার্স্টেনের জন্ম হয়েছিল ১৯২৭ সালে।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।চিকিৎসার জন্য কার্স্টেনকে নেদারল্যান্ডসের একটি নবনির্মিত মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অভিযোগ, মানসিক হাসপাতালে ভর্তির পরে তাঁর মৃত্যু হলে কার্স্টেনের মস্তিষ্ক বিনা অনুমতিতে সরানো হয়।অভিযোগ, সে সময় এরিক স্টর্মগ্রেন এবং লারুস আইনারসন নামে দু’জন তরুণ চিকিৎসক মানসিক রোগীদের মস্তিষ্ক হাতানোর ছক কষেছিলেন। ময়নাতদন্তের সময় তাঁদের মস্তিষ্ক সরিয়ে নিতেন তাঁরা। এর পর তা গোপন জায়গায় জমা করে রাখতেন। যদিও কী উদ্দেশ্যে দুই চিকিৎসক এমন করতেন, তা জানা যায়নি।১৯৪৫ থেকে ’৮২ সাল পর্যন্ত সে দেশে যত মানসিক রোগী হাসপাতালে মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের মস্তিষ্ক হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এবং গোটা বিষয়টি অন্ধকারে রাখা হয়েছিল ওই রোগীদের পরিবারের সদস্যদের থেকে।অভিযোগ, প্রায় ৫ বছর ধরে দুই চিকিৎসক এই ‘কুকীর্তি’ চালিয়ে যাওয়ার পর নাড এ লোরেনৎজ়েন নামে এক প্যাথোলজিস্ট ওই ইনস্টিউটের দায়িত্ব নেন। এর পরের ৩ দশক ধরে ওই চিকিৎসকদের অসমাপ্ত কাজ চালিয়ে যান নাড।দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে ৯,৪৭৬টি মস্তিষ্ক গোপনে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
বিশ্বের কোথাও নাকি মস্তিষ্কের এত বড় সংগ্রহ নেই। সে সময় ওই ইনস্টিটিউটের প্যাথোলজিস্ট মার্টিন ডব্লিউ নিয়েলসন গোটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমের দাবি। অনেকের কাছেই মার্টিনের পরিচিতি হয়ে যায় ‘ব্রেন কালেক্টর’ নামে।প্রতিটি পাত্রে গায়ে কালো কালিতে একটি নম্বর লিখে রাখা হত, যাতে ওই মস্তিষ্কগুলির কার, তা বোঝা যায়। এ ভাবেই ওই মস্তিষ্কগুলি কোন কোন রোগীর, তা জানা গিয়েছে। যদিও ১ নম্বর মস্তিষ্কটি কার, সে সম্পর্কে এখনও অন্ধকারে চিকিৎসক মহল।ইনস্টিটিউট থেকে দক্ষিণ ডেনমার্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই মস্তিষ্কগুলি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যদিও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ্যে আনেনি আমেরিকার সংবাদমাধ্যমটি।