গৃহস্থের বাড়িতে অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক উলটে মৃত্যু হল একই পরিবারের ৩ জনের। জখম হয়েছেন আরও একজন। মৃতরা সম্পর্কে মা, ছেলে ও মেয়ে। বৃহস্পতিবার রাতে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েতের মুইদিপুর এলাকায়। মৃতরা হলেন সন্ধ্যা বাউরি (৩০), রিঙ্কু বাউরি (১৪) ও রাহুল বাউরি (১২)। জখম হয়েছেন সন্ধ্যা বাউরির স্বামী প্রশান্ত বাউরি। মৃত ও জখমরা সকলেই মুইদিপুর গ্রামেরই বাসিন্দা।
জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশের উপরেও জনরোষ আছড়ে পড়ে। পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। কয়েকজন পুলিশকর্মী আহতও হন। পরে জনরোষ এলাকার বালিখাদানেও আছড়ে পড়ে। উত্তেজিত মানুষজন ওই এলাকার বালিখাদানেও চড়াও হয়। তারা বালি খাদানের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় বল এলাকা সূত্রে খবর।
উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চার্জ করতে হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে কোনওরকমে বিক্ষুব্ধ মানুষজনকে হটিয়ে দিয়ে মৃত ও জখমদের উদ্ধার করে।
জামালপুর হাসপাতালে আহত পুলিশ অফিসার
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মুইদিপুর ও সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ কয়েকটি বালি খাদান চলছে। সেই সব বালিখাদান থেকে দিনে ও রাতে শয়ে শয়ে ট্রাক ও লরিতে বালি লোড হয়। ওভারলোড বালির লরি বাঁধের রাস্তা ধরে হুগলির চাঁপাডাঙ্গা হয়ে কলকাতা চলে যায়।
বিগত বেশ কয়েকদিন যাবৎ মুইদিপুর এলাকার বাঁধের রাস্তা দিয়ে ওভারলোড বালির লরির যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় এলাকার মানুষজন বালির লরি আটকে রেখে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, যখনই মানুষ প্রতিবাদে সরব হয় তখনই পুলিশ গ্রামে পৌঁছে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আটকে রাখা লরি ছাড়িয়ে দায় সারে। এদিন ওভারলোড বালির লরি নিয়ে মদ্যপ চালক বাঁধের রাস্তা ধরে যাচ্ছিল।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় ট্রাক চালানোর সময়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারানোয় বাঁধের রাস্তার ধারে থাকা দুটি বাড়ি ভেঙে দিয়ে উলটে পড়ে। এই দুর্ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়। একজন গুরুতর জখম হয়েছেন বলে এলাকা সূত্রে খবর। দুর্ঘটনার পর মদ্যপ চালক পালালেও খালাসি ধরা পড়েছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। উত্তেজনা থাকায় রাতে মুইদিপুর এলাকায় বিশাল পুলিশ ও র্যাফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।