মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর শেষ হতেই স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন ঘিরে শোরগোল পরল মালদা জেলায়।ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত যুবক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন করেছেন।মানিকচক ব্লকের মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেস পাড়ার যুবক পিন্টু ঘোষ এর এই আবেদন ঘিরে শোরগোল পড়েছে মালদা জেলায়।
জানাগেছে,দীর্ঘ দেড় বছর ধরে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত পিন্টু ঘোষ। প্রথমে বিষয়টি পরিবার সামান্য মনে করলেও বর্তমানে এই রোগের পেছনে সর্বস্বান্ত হয়েছে গোটা পরিবার।বাড়ির ঘটি-বাটি বিক্রি করে চিকিৎসায় সমস্ত শেষ করে দিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। প্রতিদিন তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে হেলে পড়ছে যুবক পিন্টু ঘোষ। এবারে শেষ ভরসা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তাকেই চিঠি লিখে হই চিকিৎসা না হয় স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন করেছেন এই যুবক।
ভেশ পাড়া গ্রামে বসবাস পিন্টুর। রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে দুধের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।পরিবারে স্ত্রী দুই ছোট সন্তান ছাড়াও রয়েছে ভ্যান চালক বাবা ভুবন ঘোষ, মা ও দুটি ছোট ভাই। প্রায় দেড় বছর আগে শারীরিক অসুস্থতায় দেখা দেয় পিন্টুর। এরপরই পরিবারের সদস্যরা গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় দফায় দফায় কলকাতা থেকে শুরু করে ব্যাঙ্গালোর সর্বত্রে অসুস্থ পিন্টুকে নিয়ে ছুটাছুটি শুরু হয়। পরে জানতে পারেন ক্যান্সারে আক্রান্ত রয়েছে পিন্টু। নুন আনতে পান্তা ফুরায় পরিবারের কার্যত বাজ পড়ে রোগের কথা জানতে পেরে। বাড়ির সমস্ত গবাদি পশু জমি জায়গা সবকিছুই বিক্রি করে দেন অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার জন্য। ধীরে ধীরে যন্ত্রণায় কাতর পিন্টু মৃত্যুর মুখে ঢুলে পড়ছে।প্রয়োজন উচ্চ পর্যায়ে চিকিৎসা,কিন্তু সর্বস্বান্ত হওয়া পরিবার আর চিকিৎসা করাতে পারছেন না।এই পরিস্থিতিতে মানিকচক ব্লক বিডিওর মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছেন পিন্টু।দিন কয়েক হলো স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড হাতে পেয়েছেন। সেটা দিয়েও চিকিৎসা যদি হয় সেই আশায় বুক বেঁধেছে পরিবার।
গ্রামের যুবক ছেলের এমন অর্ত কান্না দূর করতে আবেদন করেছেন প্রতিবেশীরা। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থতা আজ গোটা পরিবার টাকে শেষ করে দিয়েছে। সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের দিন কাটছিল পরিবারের কিন্তু বর্তমানে সব শেষ। পিন্টুর যাতে সু-চিকিৎসা পায় সেই দাবি তুলেছেন তারাও। আরে চিকিৎসা যদি না করানো সম্ভব হয় তাহলে কষ্ট যন্ত্রণা থেকে মৃত্যুই সমাধান ভেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি করেছে পিন্টু বলে জানান গ্রামবাসীরা।
এপ্রসঙ্গে রোগে আক্রান্ত পিন্টু ঘোষ জানান, সব শেষ হয়ে গেছে সবির বিক্রি করে চিকিৎসার জন্য খরচ করা হয়েছে। প্রচুর শারীরিক যন্ত্রণা ভুগছি। এই যন্ত্রণা আর সহ্য করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি জানতে পেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল। সার্বিকভাবে তার যা যা প্রয়োজন সব রকম ভাবে পাশে দ্বারা বেন তিনি। স্বেচ্ছায় মৃত্যু আবেদন সত্যিই মর্মান্তিক ঘটনা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিশ্চয়ই তার পাশে দাঁড়াবেন। সমগ্র বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আমিও পরিবারের পাশে দাঁড়াবো।