পরনে চেক লুঙ্গি, গেঞ্জি কাপড়ের গেরুয়া ফতুয়া। তাকিয়ে রয়েছেন খানিকটা বেজার মুখেই। ঝুপো গোঁফ থেকে চুলের কাট, এমনকি চাহনিটাও পর্যন্ত মিলে যাচ্ছে। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ছবি দেখে নেটাগরিকরা চমকে গিয়েছেন। কারণ, প্রথম জীবনে বাজারে মাছই বিক্রি করতেন বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তাঁর রাজনীতিতে আসা। ফলে, ভাইরাল হওয়া ওই ছবি ঘিরে তৈরি হয় কৌতূহল।বাস্তবে রোজই এক ছবি দেখা যাচ্ছে হুগলির শেওড়াফুলির মাছবাজারে। সেখানে প্রতি দিনই দেখা মিলবে তাঁর। এক পা ছড়িয়ে বসে তিনি এক মনে কেটে চলেছেন মাছ। খদ্দেরদের দাম বলছেন।
মাছ কেটে ধুয়ে তুলে দিচ্ছেন হাতে হাতে। গুনে নিচ্ছেন টাকা। সেই অবস্থা থেকে অল্প মুখ ঘোরাতেই দেখা গেল, অনুব্রতের মতো মোটা গোঁফ রয়েছে তাঁর। চেহারাতেও তিনি প্রায় একই রকম ‘ওজনদার’। শেওড়াফুলি বাজারে মাছ কুটতে ব্যস্ত ওই প্রৌঢ়ের ছবিই ভাইরাল হয়েছে ‘বীরভূমের বাঘ’ কেষ্ট মণ্ডলের নামে!কেষ্টর সঙ্গে চেহারায় দারুণ মিল থাকা শেওড়াফুলির ওই মৎস্য ব্যবসায়ীর নাম সুকুমার হালদার। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি মাছ বিক্রি করছেন ওই বাজারে। থাকেন শেওড়াফুলি নিমাইতীর্থ ঘাট এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে। অনুব্রতের সঙ্গে তাঁর মিলের কথা তুলতেই বিরক্ত হলেন সুকুমার।
তিনি বললেন, ‘‘অনেক ক্রেতা আমাকে বলেন, সুকুমারদা, তোমাকে অনুব্রতের মতো দেখতে। এর পর এক দিন কেউ আমার ছবি পাশ থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ভাইরাল করে দিয়েছে। কারা করেছে তা আমি জানি না।ডান পা ভেঙে গিয়েছিল সুকুমারের। এখনও তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ নন। পাশাপাশি, আরও নানা অসুস্থতা রয়েছে তাঁর। এই অবস্থাতেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। রোজ সকালে পা ছড়িয়ে বসে নিষ্ঠার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। তাঁর ছবি ভাইরাল হয়ে ওঠার পিছনে যাঁরা তাঁদের শাস্তি চান সুকুমার। কিছুটা উদাস গলায় বললেন, ‘‘পুলিশ প্রশাসন যদি তাদের শাস্তি না দিতে পারে, তা হলে স্বয়ং ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেবেন। সে শাস্তি তোলা আছে।’’