হরিশ্চন্দ্রপুর, ৯ অগাস্ট : মন্দা বাজার বিমুখ আবহাওয়া । সাথে মিলছে না কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সহায়তা । মাথায় হাত পাট চাষিদের । কিছুদিনের মধ্যেই দুয়ারে সরকার প্রকল্প শুরু হবে । আশ্বাস বিধায়ক তজমুল হোসেনের ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলে উঠেছে গোটা দেশ । তবে তার মাঝেই দরজায় কড়া নাড়ছে তৃতীয় ঢেউ । ফের আতঙ্কিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ । তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব কেমন পড়বে, আবার লকডাউন হবে কি না এইসব নিয়ে শুরু হয়েছে ভাবনা । স্বাভাবিক ভাবেই এসবের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে । এবার করোনার তৃতীয় ঢেউকে ঘিরে আশঙ্কা এবার থাবা বসাতে শুরু করেছে অর্থকরী ফসল পাটে । গত কয়েকদিনে কুইন্টাল পিছু পাটের দাম কমে গিয়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা । গতবার ভালো দাম মেলায় এবার আরও বেশি করে পাট চাষ করেছিলেন চাষিরা । পাট উঠতে শুরু করেছে । কিন্তু হটাত করে দাম কমে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের পাট চাষিদের । মহাজনের কাছে ঋন, ধার দেনা করে পাট চাষ করেন অধিকাংশ চাষি । ফলে দাম আরও কমলে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে চাষিদের ।
কৃষি দফতর ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, করোনার জন্য জুট মিলে চাহিদা কমে যাওয়ায় পাটের দাম কমছে । বিপাকে পড়েছেন চড়া দামে পুরনো পাট মজুত করে রাখা ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের অনেকেই । কৃষি দফতর ও চাষিদের সূত্রে জানা গেছে, চাঁচল মহকুমার ৬টি ব্লকে ২২ হাজার হেক্টরে পাট চাষ হয়েছে । আগের তুলনায় চাষের খরচ অনেক বেড়েছে । কিন্তু গত বছর ১০ হাজার টাকা ক্যুইন্টাল দাম মেলায় এবারে আরও বেশি করে পাট চাষের দিকে ঝুকেছিলেন চাষিরা । প্রতিটি ব্লকেই চাষ বেড়েছে দু থেকে আড়াই হাজার হেক্টর ।
উমিমুল হক নামে এক পাট চাষী বলেন, “পাট চাষের খুব ক্ষতি হয়েছে । পাটের দাম কমে গেছে । ঝড়-বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে । চাষের যেটা খরচ সেটাই আমরা তুলতে পারছি না । সরকারের কাছে অনুরোধ করছি যাতে আমাদের পাশে দাঁড়ায় । না তো আত্মহত্যা ছাড়া পথ থাকবে না । কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধাও পাইনা ।”
আব্দুস সালাম নামে আরেক পাটচাষি বলেন, “পাটের জমিতে জল উঠে গেছে । পাট ধোয়া যাচ্ছে না । এদিকে বাজারে দাম নেই । মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে চাষের । মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন উনি যাতে পাট চাষীদের জন্য ভাবেন । আমরা কৃষক বন্ধু থেকেও বঞ্চিত ।”
স্থানীয় বিধায়ক তজমুল হোসেন বলেন, “কেন্দ্র সরকার ন্যায্য মূল্য দিচ্ছে না পাটের । পাটকল গুলি বন্ধ । কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না । এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী কেন্দ্র । মমতা ব্যানার্জির সরকার কৃষক দরদি । পাট চাষীদের কথা আমি বিধানসভায় তুলব । অনেকেই কৃষক বন্ধুর সুবিধা পেয়েছে । ১৬ ই আগস্ট থেকে আবার দুয়ারে সরকার প্রকল্প চালু হবে । যারা পায়নি তাদের আবেদন করতে বলব ।”
হরিশ্চন্দ্রপুরে পাট চাষিদের অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ । একে করোনার ফলে বাজার মন্দা ।তারপর ঝড় বৃষ্টির ফলে ক্ষতি হয়েছে ফসলের । এই অবস্থায় সরকারের উচিত পাট চাষিদের কথা ভাবা । সাথে যে সমস্ত কৃষক এখনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পায়নি তাদের দিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত ।