বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।উৎসব মুখর আম বাঙালী জীবনের চক্রব্যূহ মেলা,খেলা,খাওয়াদাওয়া ও ঘুরে বেড়ানো নিয়েই চলে।
আপামর বাঙালির জীবন গত আট মাসের লকডাউন এর কারণে হয়ে পড়েছে ছন্নছাড়া।সেই বাঙালির জীবনের অবসাদগ্রস্ততা কাটিয়ে, বাঙালির জীবনে আবার ফিরে আসুক অনাবিল আনন্দ তার ব্যবস্থা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেইসঙ্গে গ্রামীণ অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র এই মেলাগুলিকে আবার বাঁচিয়ে তোলা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্যের সর্বত্রই শুরু হয়েছে গ্রামীণ নাটক, যাত্রা,বাউল গানের আসর ও মেলার আয়োজন। গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে গ্রামীণ শিল্প-সংস্কৃতির স্থানীয় হাট বাজারের উপর। কিন্তু দীর্ঘ এই লকডাউনে সেই বাজারের ভাটার টান।
গ্রামীণ অর্থনীতির বাজার চাঙ্গা করতে পাত্রসায়র থানা এলাকার দামোদর নদীর তীরে চরগোবিন্দ্পুর ফুটবল ময়দানে শুরু হয়েছে গ্রামীণ মকর মেলা। বিগত ২৮ এবছরও রীতিমেনে মকর সংক্রান্তির পূন্য লগ্নে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী সাত দিন। উদ্যোগে চরগোবিন্দপুর, পাঁচপাড়া, ঘোড়াডাঙ্গা, তেলসাড়া বড়বাগান সহ বেশকিছু গ্রামের মানুষজন। শিল্প-সংস্কৃতির বাঁচিয়ে রাখতে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে জীবন জীবিকা ও মানোন্নয়নের কারনে এই মেলা আয়োজন।
গ্রামীণ স্থানীয় শিল্পীদের নিখুঁত শিল্প এক অপরূপ নিদর্শন এই গ্রামীণ মেলা। যেখানে গ্রামীণ সংস্কৃতির পাশাপাশি থাকছে বাউল গানের আসর, বসছে ভগবত পাঠের আসর, চলবে কৃষ্ণ নাম সংকীর্তন পালাগান প্রতিদিন সান্ধ্যায় মেলা সংস্কৃতিক মঞ্চে। এছাড়াও রয়েছে কলকাতা থেকে আগত বিভিন্ন নৃত্য,নাট্য ও চলচিত্র শিল্পীদের করা বিভিন্ন অনুষ্ঠান। থাকছে বিভিন্ন মনমুগ্ধকর সুস্বাদু খাদ্য সামগ্রীর পসরা। এছাড়াও রয়েছে গ্রামীণ সংস্কৃতির ধারক এবং বাহক বিভিন্ন ধরনের শিল্প সংস্কৃতির পরিচায়ক পসরার স্টল।
তবে এই মেলা অন্যান্য মেলা থেকে একটু অন্যরকম। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে মেলায় ঢুকাতে মাক্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে মেলায় আগত দর্শনার্থী কে দেওয়া হচ্ছে মাক্স, হাতে দেওয়া হচ্ছে স্যানিটাইজার, আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে যাতে করোনা পরিস্থিতির সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে তার জন্য দৃষ্টি রাখা হচ্ছে সজাগ ভাবে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় পর্যটক থেকে সুদূর কলকাতায় আসা শিল্পীরাও। আগামী কয়েকদিন গ্রামীণ অর্থনীতির ধারক-বাহক এই গ্রামীণ মেলাকে কেন্দ্র করেই জমে উঠবে দামোদর নদীর চর এমনটাই দাবি উদ্যোক্তাদেরও।