এক দিকে করোনা করাল থাবা অপর দিকে অতিভারি বৃষ্টির ফলে দুর্গা প্রতিমা তৈরির জন্য মাটির সংকট দেখা দিয়েছে যার ফলে চরম সমস্যায় পড়েছে চাঁচলের মৃৎ শিল্পীরা।
মালদহের চাঁচলের কুমোরটোলি এই এলাকাতে রয়েছে প্রায় ১০ টি পাল পরিবার । যাদের জাত ব্যবস্যা হলো মাটির প্রতিমা তৈরি করা। দীর্ঘ দিন ধরে তারা এই কাজের সাথে যুক্ত। শরৎকাল এলেই যেন তাদের আর ফুরসৎ থাকে না। দিবারাত্রি অক্লান পরিশ্রম করে নিখুঁত ভাবে তৈরি করে থাকেন দুর্গা প্রতিমা। কিন্তু এবছর যেন তাদের মুখ ভার। কারণ গোটা বিশ্বজুড়ে যে ভাবে করোনা ভাইরাস থাবা বসিয়েছে তাদের ওই জাত ব্যবস্যাতেও এবার করোনার থাবা পড়েছে। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছে তারা। বড় প্রতিমা কোনো মৃৎ শিল্প সৎ সাহসে গড়তে পারছে না। কারণ পুজো উদ্যোক্তাদের এখনো তেমন কোনো দেখা পাওয়া যায়নি কুমোরটোলি তে। আর যে সকল পুজো কমিটির সদস্য আসছেন তারা বড় প্রতিমার দিকে না ঝুঁকে ছোট প্রতিমা গড়তে বলছেন মৃৎ শিল্পীদের। কারণ এবছর করোনা আবহে কোনো পুজো উদ্যোক্তারা বড় পুজো করছে না। তাই তাদের বাজেটও কম । ফলে বড় প্রতিমা অর্ডার দিচ্ছেন না।
চাঁচল কুমোরটোলির মৃৎশিল্প বিশু পাল, তপন পাল, মদন পাল, রকি পালরা বলেন, একদিকে যেমন করোনা ভাইরাস অপর দিকে অতি বৃষ্টিপাতের ফলে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। খাল বিল, পুকুর, নদী নালা সমস্ত কিছু জলে ভরে গেছে। ফলে প্রতিমা গড়তে মাটির সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু কিছু দিন বাদেই তো বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজা। করোনা ভাইরাসে জন্য এবছর পুজো কমিটি গুলো তেমন ভাবে বড় পুজো না করলেও ছোটো আকারের পুজো করছেন। তাই এখন থেকে প্রতিমা গড়ার জন্য চড়া দামে ইট ভাটা থেকে মাটি কিনে প্রতীমা গড়তে হচ্ছে। ঠিক অন্য দিকে ভাইরাসের কারণে প্রতিমা সজ্জার প্রতিটা দ্রব্যের দাম একেবারে আকাশ ছোয়া। গত বছরের তারা একেকজন ১৫ থেকে ২০ টি করে প্রতীমা গড়তেন কিন্তু এবছর করোনার জন্য তা কমে একেবারে কেউ ৫ টি কেউবা ৯ টি প্রতিমা গড়ছেন।
তারা আরও জানান, পুজো হচ্ছে বলে প্রতিমা গড়তে হচ্ছে। লাভের আশা তারা এবার একেবারেই করছেন না। গত দিনে সমস্ত পুজো গলাতেই তারা লাভের মুখ দেখতে পাননি বলে আক্ষেপ করছেন। যদি এই দুর্গা পুজোয় কিছু লাভ করতে পারেন এখন সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে তারা।