মল্লরাজা বীরহাম্বীর রাসমঞ্চ অভিনব শৈলের স্থাপত্যটি আনুমানিক ইংরাজী ১৬০০ খ্রীষ্টাব্দে এই রাসমঞ্চ স্থাপন করেন ।
পিরামিডাকৃতি সৌধটি বাংলার আর কোথাও দেখতে পাওয়া যাবে না । এই মন্দির সৌধটিতে নির্দিষ্ট কোন দেবতাকে প্রতিষ্টিত করা হয়েছিল বলে জানা যায় নি । তবে এখানে বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন মন্দিরের রাধাকৃষ্ণের মূর্তি আনয়ণ করে যে বিশাল রাসােৎসব পালন করা হত সে বিষয়ে সন্দেহ নেই ।
বর্তমানকালে ও এই বিশালাকার সৌধটি মাথা উঁচু করে বিষ্ণুপুর মল্লরাজাদের গৌরবান্বিত অধ্যায়ের কথা দূরাগত পর্যটকদের কাছে ঘােষণা করছে । বিষ্ণুপুর শহরের মধ্যভাগে মহকুমা শাসকের করণ ও রবীন্দ্র স্ট্যাচুর পাশ দিয়ে পূর্বদিকে যে রাস্তা রামানন্দ কলেজের দিকে সােজা চলে গেছে সেই রাস্তার প্রায় এক কিলােমিটার দূরত্বে গিয়ে বাম দিকে তাকালে বিরাট পাহাড় প্রমাণ সৌধটি দেখতে পাওয়া যাবে খােলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে আছে ।
https://www.facebook.com/230205334351193/videos/495270501434363
কথিত আছে কোন এক বৎসর ঐ রাসমঞ্চে রাস উৎসব পালন করার সময় বজ্রপাতে রাসমঞ্চ এর একাংশ ভেঙে যায় । তখন থেকেই এই রাস মন্দিরে রাস উৎসব বন্ধ হয়ে যায় । এরপর রাসমঞ্চ থেকে রাস উৎসব নিয়ে যাওয়া হয় বিষ্ণুপুর রাজ দরবারে সেখানে কয়েক বছর রাস উৎসব পালন হওয়ার পর আনুমানিক 1850 সালে রানী চূড়ামণি দেবী বিষ্ণুপুরের মাধব গঞ্জে মদন গোপাল মন্দির স্থাপন করেন তারপর থেকে এই মদন গোপাল মন্দিরে রাস উৎসব পালিত হয়ে আসছে ।
বর্তমানে বিষ্ণুপুর এবং তার আশেপাশে থেকে আসা 36 জোড়া রাধা কৃষ্ণের বিগ্রহকে বিশেষ সাজে সাজিয়ে রাধামদন গোপাল জিউয়ের মন্দিরে আনা হয়। পাঁচ দিন ধরে এখানে বিশেষ পুজাপাঠ ও সব কটি বিগ্রহকে আলাদা আলাদাভাবে সন্ধ্যারতি করা হয় ।
রাস উৎসব উপলক্ষ্যে ফি বছর প্রচুর দর্শনার্থীরা ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’ বলে খ্যাত বিষ্ণুপুরে হাজির হন । আলোর রোশনাই, পাঁচ দিন ধরে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর রাস মেলাকে কেন্দ্র উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে থাকতেন এক সময়ের মল্ল রাজাদের প্রাচীণ এই রাজধানী । তবে করুণাময় পরিস্থিতিতে আলোর রশ্মি থাকলেও সেই চেনা ভিড় আর নেই থাকছে না কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও নম নম করেই সাড়তে হচ্ছে রাস-উৎসব।